সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তানজিন তিশার পক্ষ থেকে বিস্তারিত বিবৃতি পুরুষ বাউলরা বিছানায় ডাকে, সাড়া দিলে গান পাওয়া যায়: নারী বাউল শিল্পীর অভিযোগ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন জনপ্রিয় টিকটকার ববি গ্রেভস নায়িকা পপি’কে আইনি নোটিশ পাঠানো হলো ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর প্রথমবার মুখ খুললেন হেমা মালিনী বিপিএলের আসন্ন মৌসুম শুরু হবে ১৯ ডিসেম্বর, ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৬ জানুয়ারি বিপিএল নিলামে পাথিরানা, চার্লস ও মেন্ডিসসহ ২৫০ বিদেশি ক্রিকেটার বিপিএলের নিলামে ৩ ভারতীয়, সুইডেনের এক ক্রিকেটার বিপিএল: নোয়াখালী এক্সপ্রেসে সৌম্য-হাসান, কোচ সুজন হৃদয়ের লড়াইয়ে মরিয়া বাংলাদেশের প্রতিরোধ, তবে শেষ হাসি আয়ারল্যান্ডের
বিদেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতি শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

বিদেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতি শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

আন্তর্জাতিকভাবে নানা দেশের সরকার উচ্ছেদ ও শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার পুরোনো মার্কিন নীতির দিন শেষ বলে জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি উল্লেখ করেন, ওয়াশিংটনের এই বহুপাক্ষিক নীতিগুলি কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পক্ষে যায়নি; বরং এর ফলে বিশ্বে অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং প্রকৃতিগত নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে এক নজির হলো ইসলামী জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএসের উত্থান, যা বিশ্বের বহু অঞ্চলে অকার্যকর এবং ধ্বংসের মুখে পরিণত করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে নতুন মার্কিন প্রশাসন এই পুরোনো নীতিগুলি পরিত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক পথ গ্রহণ করতে চায়।

গত ৩১ অক্টোবর বাহরাইনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সিকিউরিটি স্টাডিজ (আইআইএসএস) এর বার্ষিক নিরাপত্তা সম্মেলন ‘মানামা সংলাপে’ এসব গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন গ্যাবার্ড। তিনি বলেন, “পুরোনো ওয়াশিংটনের চিন্তাধারা আজকের বিশ্বের জন্য আর উপযোগী নয়। এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমরা পিছিয়ে এসে এক অকার্যকর পর্যায়ে বন্দী হয়েছি, যেখানে মূল লক্ষ্য ছিল অন্য দেশের শাসন পরিবর্তন বা সরকার পুনর্গঠন। এই ‘একই সাইজ সমস্ত জন্য’ নীতির ফলে, যেখানে অন্য দেশের সরকার উৎখাত করে নিজেদের মতামত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হত, সেখানে ফলাফল ছিল আরেকটি শত্রুতা, অর্থহানিসহ আইএসআইএসের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি।”

তুলসী গ্যাবার্ড আরও বলেন, বর্তমানে ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য তারা আব্রাহাম চুক্তির পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে Mỹ এখন জোর দিচ্ছে কূটনীতি ও আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে। উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কমানোর জন্য ট্রাম্পের সরাসরি আলোচনা ও যোগাযোগের উদ্যোগ। এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি এক প্রজন্মের জন্য স্থবির পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছেন।

গ্যাবার্ড উল্লেখ করেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বমঞ্চে নতুন করে শক্তি অর্জন করেছে। তিনি বলছেন, সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে অর্থনৈতিক সমঝোতা প্রতিষ্ঠা, বলকান অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আনা, ভারতের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের উন্নয়ন, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে শান্তি চুক্তি, রুয়ান্ডা ও ডিআরসি’র মধ্যে শান্তিচুক্তি—এই সকল সফলতা ট্রাম্পের রাজনৈতিক және কূটনৈতিক কৌশলের ফল। এমনকি, মিসর ও ইথিওপিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাতও তিনি রুখতে সফল হয়েছেন।

সর্বশেষ, তিনি উল্লেখ করেন, হামাসের হাতে আটকমাত্র কয়েকজন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের কূটনৈতিক উদ্যোগে এক ঐতিহাসিক অগ্রগতি দেখানো যাচ্ছে। যদিও পরিস্থিতি এখনও সূক্ষ্ম, তবে এই শান্তিচুক্তি ধীরে ধীরে ফলপ্রসূ হচ্ছে এবং এই সংলাপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা এই প্রক্রিয়াকে সহজতর করে তুলছেন।

গ্যাবার্ড বললেন, এই সব প্রচেষ্টার মূল ভিত্তি হলো, ‘যৌথ স্বার্থের উপর গুরুত্ব দেয়ার’ ভাবনা। যেখানে স্বার্থের মিল রয়েছে, সেখানে পারস্পরিক লাভজনক সমাধানের খোঁজ করা; মতপার্থক্যসমূহ সংলাপে সমাধান করা। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উপলব্ধি করেন, সবাই আমাদের মতো একই মূল্যবোধ বা শাসনব্যবস্থা অনুসরণ করে না, যা স্বাভাবিক। তাই গুরুত্বপূর্ণ হলো—অভিন্ন স্বার্থগুলো চিহ্নিত করে, সেই অনুযায়ী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা। জ্বালানি নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নই স্থায়ী সম্পর্কের মূল ভিত্তি।”

গ্যাবার্ড আরও বলেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মানে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেওয়া নয়। বরং ট্রাম্প দেখানো চেস্টা করছেন, সরাসরি কূটনীতি ও সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে, যেখানে অন্যরা ভয় পায় সেখানে অগ্রগতি হয়। এতে বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত হয়।

শেষে, বাহরাইনে উপস্থিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশে গ্যাবার্ড বলেন, ‘আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে। বাহরাইন এই ধরণের সংলাপের জন্য আবারও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির পথে আমাদের পথপ্রদর্শক।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোকে এর থেকে শিক্ষা নিয়ে যৌথ স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করতে হবে।’

গ্যাবার্ড বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এখন শান্তির পক্ষে, যেখানে যুদ্ধের বদলে সহযোগিতা নিরাপত্তার মূল ভিত্তি হবে। এই শান্তিই হবে দেশের সমৃদ্ধির মূল চাবিকাঠি।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd